গণযুদ্ধ ১৫/সেপ্টেম্বর, ২০১৮

গণযুদ্ধ ১৫/সেপ্টেম্বর, ২০১৮

পার্টির গণ-রাজনৈতিক বুলেটিন : সেপ্টেম্বর, ২০১৮ : দামÑ ৫ টাকা

ভলিউমÑ ২, নংÑ ১৫ : বিশেষ গ্রাহক মূল্য – ১০ টাকা

পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির গণযুদ্ধ সম্পাদনা বোর্ড কর্তৃপ্রকাশিত   Web: pbsp-cc.blogspot.com

 

বুর্জোয়া নির্বাচনে জনগণের মুক্তি হয় না

বিপ্লবী রাজনীতি ও গণযুদ্ধই মুক্তির পথ

সামনে সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচন নিয়ে শাসক শ্রেণির ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতা-বহির্ভুত সকল পক্ষই সরগরম। বড় ধনী শ্রেণি ভোট দেয়াকেই একমাত্র ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে প্রচার করে। কিš‘ বাস্তবে এই ভোটের মাধ্যমে শ্রমিক-কৃষকসহ নিপীড়িত জনগণের কোন ক্ষমতা অর্থাৎ গণক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ সত্য বিগত প্রায় ৫০ বছর ধরে ভোট দিয়ে দিয়ে জনগণ নিজেরাই দেখে আসছেন। এর কারণ হলোÑ বর্তমান ব্যব¯’াধীনে ভোট হ”েছ শাসক শ্রেণির নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের বা ভাগ-বাটোয়ারা করার একটি ব্যব¯’া। আমাদের দেশে সে ভোটও প্রায়ই সঠিকভাবে হয়না, হয় নামমাত্র। যেমনÑ শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে সা¤্রাজ্যবাদ বিশেষত: ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় ভোট ছাড়াই পুলিশ-র‌্যাব-সেনাবাহিনী দিয়ে ক্ষমতা দখল করে বিগত ৫ বছর দেশ শাসন করে চলছে। কোথায় ছিল তাদের গণতন্ত্র, কোথায় সংবিধান?

ক্ষমতা বদলের এই পদ্ধতিকে তারা শান্তিপূর্ণ পথ বলে মুখে ফ্যানা তুলে। সুশীল সমাজ নামের্জায়াবুব্যেব¯’ার ধারকেরা জনগণকে বুঝানোর চেষ্টা করে ভোটের মধ্যেই জনগণের ক্ষমতা, ভোটই গণতান্ত্রিক অধিকার।

সিপিবি-বাসদসহ বামপš’ী নামধারী কিছুৃ দলও শুধু ক্ষমতার হাত বদল নয়, শান্তিপূর্ণ পথে বিপ্লব সংঘটনের দিবা স্বপ্নও দেখে থাকে। (এদেরকে আমরা বলি সংশোধনবাদী; কারণ তারা বিপ্লবের আদর্শ মার্কসবাদকে সংশোধন করে ভুয়া বামপš’ীতে পরিণত হয়েছে)। কিš‘ পৃথিবীর ইতিহাস পর্যবেক্ষণে দেখা যায়Ñ সমাজ পরিবর্তনের বিপ্লবী আন্দোলন-তো দূরের কথা, জাতীয় রাষ্ট্র গঠনের জন্য জাতীয়বাদীরা বিভিন্ন দেশে সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। আর সমাজতন্ত্রের জন্য রাশিয়া-চীনে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও সমাজের আমূল পরিবর্তন হয়েছিলো।

বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেও দেখা যা”েছÑ জাতীয় এবং ¯’ানীয় নির্বাচনে ব্যপক কারচুপি, জালভোট, ভোট ডাকাতি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ভোট কেন্দ্র দখলের এক মহা উৎসব চলেছে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন এবং সর্বশেষ ৫টি সিটি নির্বাচনে আঃ লীগের গুন্ডা বাহিনী ও পুলিশ মিলে বন্দুকের নলের জোরে ভোট কেন্দ্র থেকে জনগণকে বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে নিজেরা সিল মেরেছে। এ থেকেই বোঝা যায়, তারা ক্ষমতায় আসে বন্দুকের জোরে, ক্ষমতায় থাকে বন্দুকের জোরে, জনগণকে শোষণ করে বন্দুকের জোরে, জনগণের সব অধিকার হরণ করে বন্দুকের জোরে। আমাদের দেশে বড় ধনীদের রাজনীতিতেও সশস্ত্র সন্ত্রাস এক সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের পিতা শেখ মুজিব ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রক্ষী বাহিনী দিয়ে ২৫ হাজার বামপš’ী কর্মীকে হত্যা করিয়েছিল। আবার ‘৭৫ সালেই সামরিক বাহিনীর বিক্ষুব্ধ একাংশ সশস্ত্র হামলা চালিয়ে শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করেই বাকশাল সরকারকে উ”েছদ করে এবং ক্ষমতার হাতবদল ঘটায়। জিয়া ক্ষমতায় আসে সেনাবাহিনীর বন্দুকের জোরে। আর ৮২ সালে বন্দুকের জোরেই বিএনপি’র সাত্তার সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল এরশাদ। ২০০৮ সালে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনরাও সশস্ত্র শক্তির জোরে ক্ষমতা নিয়েছিল। এসব সশস্ত্র মহা উৎসবের উৎস হ”েছ ক্ষমতাসীনদের সেনা ও পুলিশ বাহিনীসহ হাজারো রকমের তথাকথিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সশস্ত্র মাস্তান বাহিনী।

বৃটিশ আমল থেকে পাকিস্তান আমল হয়ে বাংলাদেশ আমলে জনগণ অনেকবার ভোট দিয়েছেন। তাতে শ্রমিক-কৃষকসহ কোনো নিপীড়িত জনগণের মুক্তি হয়নি। বড় ধনীরা প্রচার করে বাংলাদেশ হয়েছে, বাঙালিরা মন্ত্রী-এমপি-বড় অফিসার-ব্যবসায়ী হয়েছে। কিš‘ আমাদের গরীব (শ্রমিক-কৃষক) বাঙালিদের কী হয়েছে? পাকিস্তানের ২২ পরিবারের জায়গায় এখন ২২ হাজার বাঙালি ধনী হয়েছে। বাঙালিরা ধনী বাঙালি ও গরীব বাঙালি এই দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। ‘আমরা সবাই বাঙালি’Ñ এই কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সব লুটপাট করছে। তাদেরই কেউ কেউ সামরিক-বেসামরিক আমলা, বড় ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবসায়ী, চোরা কারবারী, ভূমিদস্যু বা সন্ত্রাসী গডফাদার। ভোট হলেও এরা জিতে, না হলেও এরা জিতে।

এই শাসক শ্রেণি প্রচার করে জনগণ যাকে ভোট দিবে সে-ই বিজয়ী হবে। এ সবই হ”েছ মিথ্যা-প্রতারণা। ভোট কারচুপি-কেন্দ্র দখল-মারামারি সেসব বাদ দিলেও নির্বাচনী ব্যব¯’াই এমনভাবে করা হয়েছে যাতে গরীব জনগণ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না। যেমনÑ কাউকে এমপি প্রার্থী হতে হলে জামানতের টাকাসহ কমপক্ষে ২০/২৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়। সেই টাকা কোনো শ্রমিক-গরীব কৃষক-নি¤œ মধ্যবিত্তের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। এভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া এ ব্যব¯’ায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তাই নির্বাচন-ভোট হলেই জনগণের মুক্তি হবে না। বিপ্লব-তো আরো দুরের কথা। নির্বাচনবা শান্তিপূর্ণ পথে কোনো বিপ্লবই সম্ভব নয়। শ্রমিক-কৃষক-মধ্যবিত্ত জনগণসহ ব্যাপক জনগণের গণক্ষমতাও এতে হবে না। সেজন্য জনগণের প্রকৃত শত্রু বিদেশী সা¤্রাজ্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী শক্তি ও তাদের এ দেশীয় দালাল আমলা মুৎসুদ্দী ও সামন্তবাদী শোষণ উ”েছদ করতে হবে। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে এখন শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে কৃষকের প্রাধান্যে নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য বুর্জোয়া নির্বাচনের পথ বর্জন করতে হবে। গণযুদ্ধের পথ আঁকড়ে ধরতে হবে।

আগামী নির্বাচনেও

হাসিনা-আওয়ামী লীগ প্রভু-ভারতের মুখাপেক্ষী

২০১৪ সালে বিরোধী বিএনপি’র আন্দোলনের মুখে ভোটের রাজনীতিতে হাসিনা-আওয়ামী লীগ যখন মহাসংকটে, তখন ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশে এসে হাসিনা-আওয়ামী লীগকে বলা যায় হাতে ধরে ক্ষমতায় বসিয়ে যায়। এবং শিখিয়ে যায় কীভাবে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের ধার না ধেরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা যায়। সেই থেকে হাসিনা-আওয়ামী লীগ একটা বুদ্ধি পয়েে যায় নতুন ধারার নির্বাচনের, ভোটারবিহীন নির্বাচন, অথবা যা পরে আরো উন্নত পর্যায়ে পে․ঁছেছে ৫ সিটির মেয়র নির্বাচনে। এবারও যখন প্রায় একই অব¯’া, তখন হাসিনা-আওয়ামী লীগের ভরসা সেই ভারত। সেখানেই একের পর এক তারা ধর্ণা দিয়ে চলেছে। কারণ ভারতই হলো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার আসল মুরুব্বি এবং তারা হলো ভারতের একনিষ্ঠ দালাল ও পদলেহী।

যদিও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের আসল বন্ধু কংগ্রেস ছিল ভারতের ক্ষমতায়, যা এখন নেই, ফলে হাসিনা-আওয়ামী লীগের কিছু দুঃশ্চিন্তা রয়েছেই। তবু এটা সন্দেহাতীত যে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য-শোষণ ইত্যাদির জন্য হাসিনা-আওয়ামী লীগই ভারতের প্রথম পছন্দ। বাংলাদেশে নিযুক্ত বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন প্রায় প্রতিদিন বলে চলেছে যে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এখন সর্বো”চ চূড়ায় রয়েছে। সর্বশেষ বিদ্যুৎ আমদানীর প্রকল্প উদ্বোধনে স্বয়ং মোদি বলেছে, সে হাসিনার আরো কাছে চলে এসেছে। পশ্চিম বাংলার মমতা মুখার্জী বলে দিয়েছে, ‘আপনি নির্বাচনে জিতুন, বাংলাদেশে আসবো।’ বিগত প্রায় একবছর ধরে ভারতের বহু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতাশালী নেতা-আমলারা বাংলাদেশে এসেছে, আর হাসিনা বা তার লোকেরা হরদম ভারতে যা”েছ। সেসবের মূল মনোযোগ যে আগামী নির্বাচন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শাসক শ্রেণির অন্য প্রধান পার্টি বিএনপিও একই উদ্দেশ্যে ভারতে দে․ড়াদে․ড়ি করেছে। খালেদা জিয়া এর আগে স্পষ্টই বলেছিল যে, ক্ষমতায় গেলে হাসিনার ক্সবদেশিক সম্পর্কই সে রক্ষা করবে। এর অর্ হলো, সেও ভারতকে আশ্বস্ত করেছে, এবং ক্ষমতায় যাবার জন্য ভারতের কৃপা চা”েছ। তবে যাই হোক, ভারতের দালালীতে হাসিনাও আওয়ামী লীগ যে এগিয়ে রয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। আগামী তিন/চার মাসে এসব আরো স্পষ্ট হবে। কিš‘ হাসিনা-আওয়ামী লীগের একটা সমস্যা হলো, বিগত সময়ে তারা ভারতের পাশাপাশি চীনের সাথেও বিবিধ সম্পর্কে জড়িয়েছে, যা ভারতের শাসক শ্রেণি ও রাষ্ট্রের বিশেষ পছন্দ নয়। এমনিতেই দক্ষিণ

এশিয়ার অর্থনীতি-রাজনীতিতে ভারতের এক”ছত্র প্রভাব বিগত কয়েক বছরে সা¤্রাজ্যবাদ অভিমুখী চীন অনেকটা খর্ব করে দিয়েছে। নেপাল, মালদ্বীপে চীনের পছন্দসই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শ্রীলংকাতেও পরি¯ি’তি ভারতের জন্য খুব একটা ভালো নয়। মিয়ানমারে চীনের প্রভাবের কাছে ভারতের পাল্লা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ভারতের সম্প্রসারণবাদী স্বার্থের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ ভারতের প্রকৃত দালালদেরকে ক্ষমতায় রাখা। কিš‘ হাসিনা-আওয়ামী লীগ বিগত কিছু সময় ধরে ভারত ও চীনÑ এ দু’নে․কায় পা দেয়ার ফলে তার বিপদও বেড়ে গেছে। ভারত তাকে সন্দেহ করছে, বিশেষত বিজেপি।অন্যদিকে বাংলাদেশে হাসিনার প্রকাশ্য ফ্যাসিবাদ ও গণ-বি”িছন্নতায় ভারতও বিকল্প খুঁজতে পারে। অন্তত হাসিনার উপর চাপ রেখে আরো বেশি বাগিয়ে নিতে ভারত সচেষ্ট হবে সেটা নিশ্চিত। এমনকি হাসিনার কোনো রক্তাক্ত অপসারণও অসম্ভব নয় খোদ ভারতের সম্মতি বা নীরবতার কারণে। সে কারণেই ভারতকে হাসিনা বারংবার আশ্বস্ত করছে যার অর্থ হলোÑ তারাই ভারতের সবচেয়ে বড় দালাল। তারাই বাংলাদেশে ভারতের সবচেয়ে বেশি স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে।

ভারত মুখে বলছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে তারা কোন ভূমিকা রাখবে না। কিš‘ কার্যত তারা এই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিটি ব্যব¯’া নিয়ে চলেছে। তারা আওয়ামী লীগ ছাড়াও এরশাদকে দুদিন পরপর ডেকে নি”েছ। এমনকি তারা জাকের পার্টি ও মাইজভান্ডারী দলের মতো ক্ষুদ্র কিš‘ আওয়ামী মিত্র পার্টিকেও ডেকে নি”েছ; নিশ্চয়ই নির্বাচনী কে․শলের সবক দি”েছ।

বিগত দশ বছরে হাসিনা সরকার ভারতের স্বার্থে ও বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বহু চুক্তি করেছে, যার কিছু প্রকাশ্য হলেও বহুকিছু গোপন রয়েছে। সেসবের ফিরিস্তি এখানে দেয়া সম্ভব না হলেও হাসিনার একটি বক্তব্যই যথেষ্ট। এ বছরই সে ভারতে গিয়ে বলেছিল যে, ভারতকে সে যা দিয়েছে তা ভারত সারা জীবন মনে রাখবে। অথচ তারা ভারতের কাছে তিস্তার পানির মতো সাধারণ একটি স্বার্থকেও আনতে পারেনি।

ভারত আমাদের দেশ ও জনগণের বন্ধু নয়, কখনো ছিলও না। ভারত সর্বদাই তার সম্প্রসারণবাদী স্বাের্ বাংলাদেশকে ব্যবহার করেছে, আর তাতে বিশ্বস্ত সেবকের ভূমিকা রেখেছে হাসিনার আওয়ামী লীগ। ভারতের এত বড় দালাল দক্ষিণ এশিয়ায় আর কেউ নেই। অন্যদিকে ভারতের মতো বড় শত্রু দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশ, জাতি ও জনগণের আর কেউ নয়। ভারতের সাথে সাথে বিশেষত মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদও গুরুতরভাবে এই নির্বাচন উপলক্ষে বিবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সুতরাং এটা পরি®‥ার যে, এই নির্বাচন গণতন্ত্র বা জনগণের কোন ক্ষমতা তো নয়ই, দেশের কোন সার্বভে․মত্তের প্রতীকও নয়। শাসক শ্রেণি মুৎসুদ্দিবুর্জোয়ারা এদেশকে বিদেশি প্রভুদের হাতে ’৭১-সালেই তুলে দিয়েছিল, যেমনটা পাকিস্তান আমলেও ছিল। তারই ধারাবাহিকতা চলছে। জনগণের সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে এই জাতীয় বেইমান শাসক শ্রেণি ও তাদের বিদেশি প্রভুদের উৎখাত ছাড়া কোন গণমুখী নির্বাচন এখানে হতে পারে না।

ফ্যাসিবাদী হাসিনা ও লীগ সরকার হলো

জনগণের সাথে প্রতারণার সরকার

ইদানিং আওয়ামী নেতারা উ”চস্বরে বলছে, দাবি আাদায়ের জন্য কোনো আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। কারণ তারা এতটাই গণতান্ত্রিক যে স্বে”ছায় জনগণের সকল দাবি বাস্তবায়ন করে। আর বাস্তব সত্য হ”েছ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারজনগণের আন্দোলনকে ধ্বংস এবং বিভ্রান্ত করার জন্য ডাহা মিথ্যা প্রচার ছাড়াও প্রতারণা-বিশ^াসঘাতকতার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে চলেছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ হলো “কোটা সং¯‥ার” এবং “নিরাপদ সড়ক চাই”য়ের মতো নিরীহ আন্দোলন।

একটু পর্যালোচনা করা যাক। অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের পর কোটা সং¯‥ার আন্দোলনকে যখন সরকার দমন করতে পারছে না, তখন প্রধানমন্ত্রী ‘শুয়োরের খোঁয়াড়’ সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলÑ কোনো কোটাই থাকবে না। ছাত্রদের দাবি ছিল কোটা সং¯‥ার, অথচ প্রধানমন্ত্রী ষড়যন্ত্রের নতুন কে․শল গ্রহণ করে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিল। তারপরে শুরু হলো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত-কোর্টের ছুতা এবং আন্দোলনের নেতাদের গ্রেফতার-ধরপাকড়-নির্যাতন। এ ধরনের রাষ্ট্রীয় ও লীগ-দলীয় সন্ত্রাস ও দমন-নিপীড়নে যখন আন্দোলন দুর্বল হয়ে এলো, তখন আবার এই প্রতারক মহিলাই সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যা এক ঘোষণা দিলো যে, কোন এক রায়ে নাকি আদালত মু্িক্তযোদ্ধা কোটা বাতিল করতে নিষেধ করেছে, সেজন্য সেটা সে বাতিল করতে পারছে না।

আবার “নিরাপদ সড়ক চাই” আন্দোলনে কিশোর ছাত্র-ছাত্রী, তাদের অভিভাবক, দেশবাসী যখন রাস্তায় তখন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতারাও বললো অন্দোলনটা যে․ক্তিক। এরপরই শুরু হলো কুখ্যাত মোনায়েম খানের এনএসএফ গুন্ডা বাহিনীর মতো আওয়ামী গু-া ছাত্রলীগ-যুবলীগের হেলমেট বাহিনী ও পুলিশের দ্বারা আন্দোলনকারীদের উপর হামলা। তারপরে মামলা-গুজবতত্ত্ব-গ্রেফতার-নিপীড়ন, জামাত-শিবির তকমা লাগানো এবং লোক দেখানো ভাবে নিহতদের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা, ¯‥ুলে ৫টি বাস দিয়ে জনগণের চোখে ধুলা দেয়ার বদমায়েশি। কিš‘ আসল যেসমস্যা, পরিবহনে ক্সনরাজ্য, তার সমাধানের কোন কার্যকর পদক্ষেপ হলো না। ফলে পরিবহন সেক্টরে বিশৃংখলা-মৃত্যুর মিছিল আগের মতোই চলছে, যার প্রকৃত উৎস হলো পরিবহন মালিক ও তথাকথিত শ্রমিক নেতা নামের গণশত্রুদের (যেমন, মাদারীপুরের সন্ত্রাসী গডফাদার মন্ত্রী শাহজাহান খানদের) গলাকাটা মুনাফা লুটের উৎসব।

‘৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে আত্মসমর্পণবাদী পাহাড়ী জাতিসত্তার একাংশের সাথে তথাকথিত শান্তিচুক্তি করে এই হাসিনা শান্তির দূত বনে যায়। অথচ চুক্তির মূল দাবি সেনা প্রত্যাহার, বাঙালি পুনর্বাসন বন্ধ ও ভূমি সমস্যার কোন সমাধানই তারা করেনি বিগত ২০ বছরে।

সেনা অফিসার কর্তক বিডিআর ক্সসনিকদের উপর সুদীর্ঘকালের আমলাতান্ত্রিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বিষ্ফোরণ ছিল বিডিআর বিদ্রোহ। হাসিনা সরকার তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আত্মসমর্পণ করলে বিদ্রোহীদের দাবি মেনে নেবে এবং তাদের শাস্তি ও বিচার হবে না। কিš‘ পরে দেখা গেল বিদ্রোহীদের মূল দাবি সেনা অফিসারদের নিপীড়নমূলক ব্যব¯’ার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই তারা নেয়নি এবং সাত শতের বেশি সাধারণ ক্সসনিক ফাঁসির হুমকির মুখে কারাগারে পচে মরছেন।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বিএনপি আমলে উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে ওঠে। তখন বিরোধী দলে থাকা হাসিনার আওয়ামী লীগ এই আন্দোলনকে সমর্থনের ভান করেছিল। অন্দোলনের মূল দাবি ছিলÑ উম্মুক্ত না, বিদেশী না, রপ্তানি না। দাবি মেনে নিয়ে সরকারের সাথে আন্দোলনকারীদের চুক্তি হয়েছিল। কিš‘ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত সেই চুক্তি বাস্তবায়ন না করে অব্যাহতভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে চলেছে।

রানা প্লাজা ও তাজরিন গার্মেন্টসে নিহত-আহত শ্রমিকদের দেয়া অনেক প্রতিশ্রুতিও আজ অবধি তারা পালন করেনি। বিনা ক্ষতিপূরণে, চিকিৎসার অভাবে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন তাদের পরিবার-পরিজনেরা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবির সাথেও একের পর এক প্রতারণা করছে তারা। তাই এই প্রতারক সরকার ও গোটা শাসক শ্রেণিকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে উ”েছদের বিপ্লবী রাজনীতিতে সজ্জিত হতে হবে এবং পার্টির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণযুদ্ধ গড়ে তুলতে হবে।

‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা’র নামে

ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত

ভারতীয় সম্পসারণবাদের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল করে শেখ হাসিনা প্রায় ৫ বছর ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে যা”েছ। এজন্য সে কখনো টয়লেট পেপার সংবিধান, কখনো ক্যাঙারু কোর্ট, কখনো জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধী বা সাম্প্রদায়িকতা, কখনো ভুয়া ক্রসফায়ার-বন্দুক যুদ্ধ, অর্থাৎ যখন যেটায় তার সুবিধা সেটাই ব্যবহারকছে। এই ফ্যাসিস্ট একনায়ক শেখ হাসিনা সরকারি দল ও গৃহপালিত বিরোধী দল এরশাদকে একত্রে নিয়ে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেছেÑ এভাবে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের এক অদ্ভুত দৃষ্টান্ত ¯’াপন করেছে । সে কোনো ন্যায়নীতির ধার ধারে না। সাপ হয়ে দংশন করে, আবার ওঝা হয়ে ঝাড়ে।

যার সর্বশেষ উদাহরণ হলোÑ ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর মতো নিরীহ আন্দোলনে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার অভিনেত্রী নওশাবাকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিয়ে, ঈদের আগের দিন আদালত বন্ধ থাকা সত্ত্বেও জামিনের ব্যব¯’া করে। আবার তাকে দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এই হ”েছ কথিত ‘মাদার অব মানবতা’র নেত্রী। বাস্তবে প্রকাশিত হয়েছে মাদার অব ফ্যাসিবাদের ক্সবশিষ্ট।

কিš‘ সামনে এই বছরের শেষের দিকে ‘শুয়োরের খোঁয়াড়’ সংসদ নির্বাচন। লোক দেখানো নির্বাচন করতে হলেও ভরাডুবির আশংকায় হাসিনা ও তার আওয়মিী লীগ। তাই তারা বহুবিধ ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের নীল-নকশা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে। আওয়ামী লীগের

চাপাবাজ সেক্রেটারী, যিনি সকাল বিকাল মিথ্যা বলতে সিদ্ধহস্ত, সেই ওবায়দুল কাদের আগ বাড়িয়ে বিরোধীদের উপর নির্বাচন বানচালের অভিযোগ তুলছে। আর আওয়ামী লীগ নিজেদের জনসমর্থন দেখানোর জন্য টাকা দিয়ে বিভিন্ন বিদেশী সং¯’ার মাধ্যমে জনমতের ভুয়া জরিপ প্রকাশ করছে, যাতে তারা দেখা”েছ যে, তাদের জনপ্রিয়তা নাকি বিপুল মাত্রায় বেড়ে গেছে।

সরকার বিরোধী সকল রাজ‣নতিক দলকে গুম-অপহরণ-হামলা-মামলায় দে․ড়ের উপর রেখে এই শয়তানী নেত্রী সবচেয়ে বেশী ঢাকঢোল পিটা”েছ উন্নয়ন নিয়ে। বিগত পাঁচ বছর এমন আওয়ামী কুতত্ত্ব জনগণ শুনেছেন যে, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র।২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে এরা নাকি জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। অবশ্য সেই ভোট অধিকার বা গণতন্ত্র চর্চার সুযোগও সর্বস্তরের জনগণের নেই। আর ৫৭ ধারায় নিয়ন্ত্রিত আওয়ামী দালালরা টিভির টকশোতে গিয়ে ‘সংবিধান সম্মত’ মন্তব্য করতে পারবে। সেখানে সীমা লংঘন করলে সাদা পোষাকের লোকেদের হাতে গুম হতে হবে অথবা কিছুদিন পর আধা পাগল অব¯’ায় রাস্তায় ছেড়ে দিবে। বাস্তবে এই উন্নয়নের আড়ালে চলছে সমুদ্র চুরির মতো দুর্নীতি।

লুটপাটের প্রমাণিত বহু তথ্য বিভিন্ন মাধ্যম তুলে ধরলেও প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী নেতারা নিজেরা অব্যাহতভাবে বলে চলেছে দেশ নাকি উন্নয়নের রোল মডেল। তারা নাকি সীমান্ত বিজয়, সমুদ্র বিজয়ের পর মহাকাশ বিজয় অর্জন করেছে। দেশে নাকি দুর্নীতি দমন হয়ে গেছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে, নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। এই সরকার নাকি শ্রমিক বান্ধব-কৃষক বান্ধব সরকার।

এসবই যে মিথ্যা প্রচারণা তা খোলা চোখেই দেখা যায়। শুধুদু’একটি বিষয়ে আলোচনা করা যাক। যদি সত্যিই দুর্নীতি দমন হয়ে থাকে তাহলে ব্যাংক থেকে টাকা-সোনা, খনি থেকে লক্ষ লক্ষ টন কয়লা-পাথর চুরি হলো কিভাবে? আইনের শাসন যদি প্রতিষ্ঠিত হয়েই থাকে তাহলে ভুয়া ক্রসফায়ারে বা কথিত বন্ধুক যুদ্ধে বিনাবিচারে শত শত মানুষ হত্যা কেন? নারীর ক্ষমতায়নহয়ে থাকলে এত নারী হত্যা-ধর্ষণ-অপহরণ হ”েছ কেন? ছাত্রলীগ-যুবলীগ-শ্রমিক লীগ নামে সোনার ছেলেরা এসবে এত জড়িত কেন?

লুটপাট করার জন্যই বড় বড় কিছু উন্নয়ন প্রজেক্ট গ্রহণ করা হ”েছ। যত বড় প্রজেক্ট তত বেশি দুর্নীতি ও লুটপাট। এই উন্নয়নে শ্রমিক-কৃষকসহ ব্যাপক নিপীড়িত জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না। স¤্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণ বাদ ও তাদের সহযোগী বড় ধনী শ্রেণি যারা মোট জনগোষ্ঠীর ১ পার্সেন্ট, তাদের উন্নয়ন হয়; বঞ্চিত হয় ৯৯ পার্সেন্ট। এই তথাকথিত উন্নয়নকে ব্যাঙ্গ করে গত রোজার ঈদের আগে চট্টগ্রামে জাকাতের কাপড় সংগ্রহ করতে গিয়ে ১১ জন দু¯’ নারী নিহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সরকার সস্তা জনসমর্থনের জন্য শুরু করেছে মাদক বিরোধী অভিযানের নামে এক নতুন গণহত্যা-অভিযান। জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২০০ লোককে তারা এ অভিযানে বিনাবিচারে হত্যা করেছে। এসব হত্যাকা-কে জায়েজ করার জন্য সেই পুরনো বন্ধুক যুদ্ধের গল্প ফাঁদা হ”েছ। অথচ যারা মাদক ব্যবসায়ে আওয়ামী ঘরাণাগডফাদার, যেমন, বহুল আলোচিত বদি এমপি বা ইয়াবা ব্যবসায়ী পুলিশ-র‌্যাব অফিসারদের গায়ে কোনো আঁচড় লাগেনি।

এই মাদক অভিযানের আরো একটা উদ্দেশ্য হ”েছ, সারা দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা। যাতে নির্বাচনী ‣বতরণী সহজে পার হওয়া যায়। আরেকটি উদ্দেশ্য হলো মধ্যবিত্তের সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়াÑ সেটাও নিছক ভোট-রাজনীতির কে․শল। সর্বশেষ এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, যদিই বা কোনভাবে এই সরকার আগামীতে না থাকে তাহলে আসল অপরাধী সরকার দলীয় নেতা ও পুলিশ-র‌্যাবের গডফাদাররা যেন বিপদে না পড়ে সেজন্য সোর্সদেরকে মেরে ফেলে প্রমাণ নষ্ট করা।

যে কোন ভাবে শেখ হাসিনা তার বাবার মতো আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে যা”েছ।

অথচ, যেসব সমস্যা জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ সেসবকে পাশ কাটিয়ে তারা ভারতীয় প্রভুদেরকে খুশী রাখছে, যেমন, ভারতকে খুশী করার

লক্ষে তিস্তা চুক্তি নিয়ে উ”চবাচ্য করে না। এমনকি সদ্য সমাপ্ত বিমসটেক সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আলোচ্যসূচিতেও রাখেনি।

আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ধারাবাহিকতার অর্থ হ”েছ আরও লুটপাট-দুর্নীতি, আরো ক্রসফায়ার-গুম, আরো নির্যাতন-নিপীড়ন, আরো বেশি করে সা¤্রাজ্যবাদ বিশেষত: ভারতীয় সম্প্রসারণবাদীদের বাজার সম্প্রসারণ, তাদের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য জোরদারকরণ।

আওয়ামী বিরোধী শাসক শ্রেণির অপর অংশগুলো, বিশেষত বিএনপিও ক্ষমতায় থাকতে একই ধারায় চলেছে, আগামীতেও তার অন্যথা হবে না। কারণ, তারা একই বুর্জোয়া শাসক শ্রেণির দল। এই বড়ধনী শ্রেণি ভাগ-বাটোয়ারা করে বিগত ৪৮ বছর দেশকে লুটেপুটে খা”েছ, জনগণকে সীমাহীনশাষণে করছে, বিদেশী প্রভুদের কাছে দেশকে বিকিয়ে দি”েছ। এরা নিজ শ্রেণির মধ্যে মারামারি-ভোটাভুটিকে জনগণের গণতন্ত্র বলে চালায়। শ্রমিক-কৃষকসহ নিপীড়িত জনগণের সত্যিকার মুক্তির জন্য নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব নির্বাচনের মাধ্যমে হতে পারে না। এজন্য গণযুদ্ধের মাধ্যমে এই শ্রেণিটিকে উ”েছদ করতে হবে, তাদের স্বার্থরক্ষাকারী এই রাষ্ট্রযন্ত্রটিকে ধ্বংস করতে হবে। তা নাহলে জনগণকে তিমিরেই থাকতে হবে।

আঞ্চলিক সংবাদ

কৃষক-মজুর মুক্তিফ্রন্টের মে দিবস পালন

গত ৪ মে পার্টির উত্তর অঞ্চলের চলনবিল শাখায় ‘কৃষক-মজুর মুক্তি ফ্রন্টে’র উদ্যোগে মে দিবসে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। একটিআদিবাসী গ্রামে অনুষ্ঠিত এই সভায় আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের নারী-পুরুষ-আদিবাসী কৃষক জনগণ উপ¯ি’ত ছিলেন। ‘গণমুক্তি বাহিনী’র পাহারায় অনুষ্ঠিত সভায় মে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন পার্টির ¯’ানীয় নেতৃত্ব, বাহিনীর সদস্য এবং মুক্তিফ্রন্টের নেতাগণ। সভাশেষে একটি সাং¯‥ৃতিক অনুষ্ঠান হয়। মে দিবস উপলক্ষে ‘কৃষক-মজুর মুক্তিফ্রন্টে’র চলনবিল শাখা একটি লিফলেট প্রকাশ করে।

মাদারীপুর পার্টি-শাখার একটি প্রতিবাদ

বিলম্বে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, গত ১৯/০১/২০১৮ ক্সদনিক ‘ভোরের কাগজ’ পত্রিকা মাদারীপুরের রিপোর্টার জনাব জাহাঙ্গীর আলমের একটা খবর প্রকাশ করেছে নিচের শিরোনামেÑ “মাদারীপুরে চরমপš’ী সর্বহারা সক্রিয় হ”েছ; রসদ জোগাতে ডাকাতি। টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট”। খবরের বর্ণনায় মাদারীপুর সদর থানার শিরখাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম মাঠ গ্রামের কথা বলা হয়েছে।

বাস্তব সত্য হলো, ঐ গ্রামে বা তার আশেপাশে আমাদের পার্টির কোন সক্রিয় তৎপরতা সাম্প্রতিক কালে হয়নি। তাহলে রিপোর্টার এই খবর পেলেন কোথায়? তবে শিরখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবর হাওলাদার পূর্বাপর এ এলাকায় পার্টির বিরুদ্ধে তার ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যা”েছ। সে দুই বছর পূর্বে দাসেরচর ইউনিয়নের হোসেন হাটের হোসেন হাওলাদারকে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে সর্বহারা কর্মী অভিযোগে র‌্যাব দিয়ে গ্রেফতার করিয়েছিল। অন্যদিকে অত্র এলাকার ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য মফেজের সাথে রয়েছে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বে মাদারীপুরে সন্ত্রাসের গডফাদার নে․মন্ত্রী শাহজাহান খান উভয়কেই মদদ দিয়ে থাকে।

ধারণা করা যায়, ভোরের কাগজের রিপোর্টে সর্বহারা পার্টির নামে যে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে তাতে মন্ত্রী এবং মজিবর চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যÑ এভাবে মিথ্যা প্রচার দিয়ে পার্টি সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার পাশাপাশি পার্টির উপর মিথ্যা প্রচার চালিয়ে নিজেদের গণবিরোধী সন্ত্রাস চেপে দেওয়া।

এটা সত্য পার্টি পরিচালনার জন্য অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। কিš‘ জনগণ জানেন, পার্টি এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে না। আর্থিক প্রশ্নে পার্টির সুনির্দ্দিষ্ট নীতি-পদ্ধতি আছে। পার্টির রাজনীতি ও কর্মসূচিকে সমর্থন করেন এমন কর্মী-জনগণের আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে পার্টির কার্যক্রম চলে। এছাড়া শত্রুর সম্পদ দখলের লাইনও পার্টিতে রয়েছেÑ যা সাধারণভাবে গণআদালতের মাধ্যমে কার্যকরী করা হয়, এবং প্রকাশ্যে সে বিষয়ে জনগণকে অবহিত করে।

এই রিপোর্ট ব¯‘নিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক নয়Ñ ষড়যন্ত্রমূলক। তাই আমাদের মাদারীপুর পার্টি শাখা জাহাঙ্গীর আলমের এই উদ্দেশ্য প্রণোদিত বানানো রিপোর্টের প্রতিবাদ ও নিন্দা করছে।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ

‘প্রথম আলো’য় পার্টির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার

গত ৩০ আগস্ট ক্সদনিক ‘প্রথম আলো’, ‘সমকাল’ এবং ‘করতোয়া’Ñ এই তিনটি পত্রিকায় প্রায় একই ধরনের ডাহা মিথ্যা খবর প্রকাশিত হয়েছে। তা থেকে ধারণা করা যায়Ñ সংবাদদাতা একই সাংবাদিক। এবং এই কথিত সাংবাদিক এলাকার পার্টি-বিরোধী গ্যাংগুলোর সাথে যুক্ত।

সিরাজগঞ্জের প্রতিনিধি উদ্ধৃত ‘প্রথম আলো’র খবরের হেডিং “পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির নামে চাঁদা দাবি, আতংক”। সাব হেডিংÑ “মুখোশ পরে সশস্ত্র ব্যক্তিরা দল বেঁধে এলাকায় ব্যবসায়ী ও ধনাঢ্য ব্যক্তির কাছে চাঁদা দাবি করছেন। এ দলে নারী সদস্যরাও রয়েছেন।” খবরটা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। এতে পাঠককে ধারণা দেয়া হয়েছে যে, পার্টি ব্যবসায়ী বা ধনাঢ্য ব্যক্তিদেরকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের থেকে জোর করে অর্থ আদায় করছে। যা কিনা বাস্তবে করে থাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কেডাররা। অন্যদিকে আমাদের পার্টি ব্যবসায়ী বা ধনাঢ্য ব্যক্তিমাত্রই তাদের থেকে এমন পাইকারীভাবে ও জোর করে কোনো অর্ আদায় করে না।

তাড়াশে কী ঘটেছিল?

চলনবিল অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত রায়গঞ্জ-তাড়াশ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আমাদের পার্টির নেতৃত্বে কয়েক বছর যাবৎ “কৃষক-মজুর মুক্তিফ্রন্ট” খাসজমি-খাসপুকুর দখলের আন্দোলন চালিয়ে যা”েছ। দোগাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম ও ময়নুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলনের বিরোধিতা করছে। তারা পুলিশ বাহিনীর দালালী করছে। এভাবে তারা পার্টি ও কৃষক-জনগণের শত্রু হিসেবে নিজেদের ভূমিকা রাখছে।

তাদের এই অপতৎপরতা দমনের জন্য গত কোরবানী ঈদের সময়টাতে আমাদের বাহিনী উপরে উল্লেখিত দুইজনকে তাদের বাড়ীতে ঘেরাও করে আটক করে। এবং পরিবারের সদস্যদের সামনে জরিমানাসহ কিছু শর্ত দিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এই ঘটনায় ¯’ানীয় গণশত্রুরা এবং পার্টি ও বিপ্লব বিরোধী সাংবাদিকেরা মিলে মিশে চাঁদাবাজির মিথ্যা গল্প বানিয়েছে। দু’জন গণশত্রুর শাস্তির ঘটনাকে ব্যবসায়ী-ধনাঢ্য ব্যক্তি ও জনমনে আতংক নামে প্রচার করছে। তাকে আরো জোরালো করার জন্য পার্টিবিরোধী বাবলু ও লাবুদের ২/৩ বছর আগে গুড়পিপুল বাজারের গণআদালতের তথ্য অতিরঞ্জন করে এর সাথে জুড়ে দিয়েছে। এই মিথ্যা খবর বানানোই প্রমাণ করে এরা পার্টি ও বিপ্লব বিরোধী। আর এ ধরনের সাংবাদিকরাও ব¯‘নিষ্ঠ নয়, বরং উপরোক্ত ধরনের গণশত্রুদের পক্ষে কাজ করছে। তাই এদেরকেও প্রতিরোধ করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতী ভয়াবহ সংঘাত

শান্তিচুক্তি পাহাড়ে অশান্তি নিয়ে এসেছে

পাহাড়ী জাতিসত্তার জনগণের ন্যায্য সংগ্রামকে ধ্বংস করার জন্য কথিত শান্তিচুক্তির প্রতারণা ও বিশ^াসঘাতকতা এখন প্রমাণিত। এই চুক্তির মাধ্যমে সা¤্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদের দালাল শাসক আমলা মুৎসুদ্দী বুর্জোয়া শ্রেণি ও সš‘ লারমার নেতৃত্বে জনসংহতি সমিতি মিলে পাহাড়ী জনগণকে নিরস্ত্র করেছে এবং তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়েছে। ’৯৭ সালের ডিসেম্বরে এই চুক্তি হওয়ার পরপরই আমাদের পার্টি সম্পাদক একে বিশ্লেষণ করে বলেছিলেন, “……এই তথাকথিত শান্তিচুক্তি শান্তি আনতে ব্যর্থ হবে।

নতুন অশান্তির জন্ম দেবে। সর্বোপরি পাহাড়ী ও বাঙালি মূল (শ্রমিক-ৃষক)জনগণের সমস্যার কোনো সমাধান এটা দেবে না”( আনোয়ার কবীর রচনা সংকলন, প্রথম খন্ড, পৃ: ২৪২)।

বিগত ২০ বছরের মধ্যেও পাহাড়ে শান্তি-তো দূরের কথা, বরং ভয়াবহ ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো পাহাড়ী খুন হ”েছন। এ থেকে মুক্তির পথ হ”েছ অশান্তি সৃষ্টিকারী বাঙ্গালি শাসকশ্রেণি ও তাদের পাহাড়ী দালালদের উ”েছদের বিপ্লবী কর্মসূচী গ্রহণ করা। এজন্য মাওবাদী রাজনীতির ভিত্তিতে পাহাড়ী জনগণকে সশস্ত্র হতে হবেÑ দীর্ঘ¯’ায়ী গণযুদ্ধ গড়ে তুলতে হবে। গরীব বাঙালি কৃষক-মজুরদের সাথে নিপীড়িত পাহাড়ীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যত কঠিনই হোক এর কোন বিকল্প নেই।

ভারতের গণযুদ্ধ ও

ভারতের ‘গণতান্ত্রিক’ মিডিয়া

বুর্জোয়ারা বলে ভারত গণতান্ত্রিক দেশ এবং মিডিয়া নাকি স্বাধীন। এসবই হ”েছ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তাদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার ক্সতরি করা মিথ্যা ভাবমুর্তি। সকলেই জানেনছত্তিশগড়কে আবর্তিত করে সারা ভারতে মাওবাদীদের সাথে বছরের পর বছর শাসক বুর্জোয়া শ্রেণি ও তাদের রাষ্ট্রের যুদ্ধ চলছে। তবে ভারত সরকার এবং তাদের মিডিয়া মাওবাদীদের খবরাখবর সাধারণভাবে প্রচার করে না। যুদ্ধে দুই পক্ষেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়। মাওবাদীদেরও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় এটা সত্য। কিš‘ সরকারি ডিয়ামি জনগণের মাঝে আতংক ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য বহু সময়ই নিরীহ বা সমর্থক জনগণকে হত্যা করে মাওবাদী নেতা-গেরিলা হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা প্রচারণা দেয়।

সরকারী বর্বর দমন অভিযানকে মোকাবিলা করে গণযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে তা তুলে ধরার লক্ষে বেসরকারি ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাওয়া ২০১৮ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মাওবাদীদের বিবিধ সামরিক এ্যাকশনের আংশিক কিছু খবরাখবর এখানে দেয়া হ”েছ। যা থেকে বোঝা যায় মাওবাদীরা দমনরত শত্রুর উপর আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন।

* অনলাইন মিডিয়া ‘লাল সংবাদে’র খবরÑ গত ২৪ জানুয়ারী ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার ইরপানারানা এলাকায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর অভিযান চালানোর সময় বিশেষ রিজার্ভ বাহিনী আকষ্মিক হামলার মুখে পড়ে। এতে ২ জন সাব ইন্সপেকটর ও ২ জন কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৭ জন।

বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরÑ ১৩ মার্চ এই রাজ্যের বহুল পরিচিত সুকুমা জেলায় ২১২ আরপিএফসি ব্যাটালিয়নের পেট্রোলিং টিম এন্টি-মাইন গাড়ীতে যখন ষ্টিরাম থেকে পালোডি যা”িছলো তখনই গেরিলারা মাইন বিষ্ফোরণ ঘটায়। একই সাথে এ্যামবুশ আক্রমণ চালায়। এখানে ৯ জন সিআরপিএফ জোয়ান নিহত এবং ৩ জন আহত হয়।

“টাইমস অব ইন্ডিয়া”র খবরে প্রকাশÑ ৯ এপ্রিল ছত্তিশগড়ের বিজয়পুরা জেলায় মাওবাদীদের অতর্কিত আক্রমণে ২ জন সরকারী ক্সসন্য নিহত ও ৫ জন আহত হয়।

টাইমস অব ইন্ডিয়া.কম জানায়Ñ ৪ মে এই রাজ্যের ধাওয়ালপুর জেলার গরিয়াবাঁধের আলমোরা পাহাড় এলাকায় দুপুরের দিকে মাওবাদী দমন অভিযানে নেমেছিল সিআরপিএফ ৬৫ ব্যাটালিয়ন এবং ছত্তিশগড়ের ¯’ানীয় দল। হঠাৎ এরা আক্রমণের শিকার হয়। এতে ২ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।

২১/৫/১৮ তারিখে ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া জেলার চোলনার গ্রামে মাওবাদী গেরিলাদের পাতা এক ভূমি মাইন বিষ্ফোরণে ৪ পুলিশ ও ৭ নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছে। গ্রামের রাস্তায় মাওবাদীদের ধরার জন্য তল্লাসী চালানোর সময় এই বিষ্ফোরণ ঘটে।সরকারি বাহিনীর সমুদয় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্র গেরিলারা নিয়ে যায়।

“বাংলাদেশ প্রতিদিন”-এর ২৮/৬/১৮-এর খবরÑ ঝাড়খন্ড রাজ্যে গারবা জেলার চিনজো এলাকায় মাও-গেরিলাদের মাইন বিষ্ফোরণে ৬ জাগুয়ার ফোর্স নিহত হয়েছে। এ হামলায় বেশ কয়েকজন সরকারি ক্সসন্য আহত হয়েছে।

অপারেশন ‘গ্রিনহান্ট’ নামক সরকারি বর্বর দমন নির্যাতনকে মোকাবেলা করে গণযুদ্ধ এগিয়ে চলেছে। শাসক বিজেপি আর গণতন্ত্রের ভড়ং রক্ষা করতে পারছে না। ২৮ জুলাই একযোগে সারা ভারতে জনগণের পক্ষে সো”চার ও মাওবাদী আন্দোলনের সমর্থক এমন খ্যাতিমান লেখক-বুদ্ধিজীবী-মানবাধিকার সংগঠকদের গ্রেফতার করেছে। মনে হয় ভারতে অঘোষিত জরুরি অব¯’া চলছে।
গণযুদ্ধকে সমর্থন করুন। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ মিত্র খুনী মোদীর বিরুদ্ধে সো”চার হোন।

আজীবন বিপ্লবী কমরেড রশীদের মৃত্যু

গত ৫ মে, ২০১৮ কমরেড রশীদ বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল আনুমানিক ৭২ বছর। পার্টি প্রতিষ্ঠাতা ক. সিরাজ সিকদারের মৃত্যু পরবর্তী বিপর্যয় কাটিয়ে ক. আনোয়ার কবীরের নেতৃত্বে নতুন সারসংকলনের ভিত্তিতে

’৮০-র দশকের প্রথমদিকে নরসিংদী জেলায় সশস্ত্র সংগ্রাম বিকাশ হতে থাকে। সে সময় থেকেই বহু চড়াই-উৎরাই মোকাবিলা করে ক.

রশীদ আমৃত্যু পার্টির সাথে যুক্ত ছিলেন। নব্বই দশকের শেষের দিকে পার্টি বিভক্ত হলে খুব অল্প সময়ের জন্য তিনি ভুল লাইনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। কিš‘ দ্রুতই তিনি আমাদের পার্টিতে ফিরে আসেন।

শত্রুর দমন-নির্যাতন, পার্টির সাময়িক প্রতিকূলতায় কখনো যোগাযোগ বি”িছন হলে নিজ উদ্যোগে পার্টির সাথে সংযোগ প্রতিষ্ঠা করার অনেক উদাহরণ তার জীবনে রয়েছে। পারিবারিক শ্রেণি গরীব কৃষক। গুরুতর অসু¯’ শয্যাশায়ী অব¯’ায় পার্টি পরিচালকের সাথে দেখা হলে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পার্টির কাছ থেকে মৃত্যুকালীন বিদায় নেন এবং পরামর্শ দেন কিভাবে পার্টি এই অঞ্চলে পুনর্গঠিত হতে পারে। পার্টি-সদস্য এই কমরেড জেলা শাখার সাংগঠনিক কমিটির সদস্য ছিলেন। ক. রশীদের শোকাভিভূত পরিবারের প্রতি পার্টি সমবেদনা জানা”েছ। ক.রশীদ লাল সালাম।